মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত তথ্য (২০২৪)

মৃত্যু অবধারিত হলেও এই শব্দটি সম্ভবত কারো পছন্দ নয় আর একটি পরিবারে যখন প্রিয় কারোর জীবনাবসান হয়, সেসময় শোকসন্তপ্ত সদস্যদের মাথায় হয়ত অনেক কিছুই কাজ করে না। যেমন, সঠিক সময়ের মধ্যে মৃত্যু নিবন্ধন করা।

কিন্তু সেটি করতে হবে মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে এবং মৃত্যু নিবন্ধন ওই পরিবারের বিভিন্ন কাজে যেমন দরকার তেমনি রাষ্ট্রীয় পর্যায়েও এর অনেক গুরুত্ব রয়েছে।

মৃত্যু নিবন্ধন কি?

মৃত্যু নিবন্ধন হলো মৃত ব্যক্তির নাম, মৃত্যুর তারিখ, মৃত্যুর স্থান, লিঙ্গ, পিতা বা মাতা বা স্বামী অথবা স্ত্রীর নাম নির্ধারিত নিবন্ধক কর্তৃক খাতায়/রেজিস্টারে লেখা এবং মৃত্যু সনদ প্রদান করা।

মৃত্যু নিবন্ধন কি কি কাজে লাগে?

মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বণ্টন, পারিবারিক পেনশন প্রাপ্তি প্রভৃতি কাজের জন্য মৃত্যু নিবন্ধন প্রয়োজন। তদুপরি মৃত্যু নিবন্ধিত না হলে দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা নির্ণয় সম্ভব হবে না। মৃত্যু নিবন্ধন করতে হলে মৃত ব্যক্তির জন্ম নিবন্ধন থাকতে হবে। জন্ম নিবন্ধন করা না থাকলে জন্ম নিবন্ধন সম্পাদনের পর মৃত্যু নিবন্ধন করতে হবে।

মৃত্যু নিবন্ধন আবেদন প্রক্রিয়া?

মৃত্যু নিবন্ধনের নির্ধারিত আবেদন ফরমে (ছাপানো বা হাতে লিখা হলেও চলবে) নিবন্ধকের নিকট নিম্নে বর্ণিত দলিল বা প্রত্যয়নসহ আবেদন করতে হবে।আবেদন ফরমের যথাস্থানে নিম্নবর্ণিত এক বা একাধিক প্রত্যয়ন বা দলিল সংযুক্ত থাকতে হবে:

নিবন্ধক যেরূপ প্রয়োজন মনে করেন মৃত্যুসংক্রান্ত সেরূপ অন্য কোন দলিলের সত্যায়িত অনুলিপি।

মৃত্যু তথ্য প্রদানকারী কারা?

মৃত ব্যক্তির পুত্র বা কন্যা বা অভিভাবক মৃত্যুর ৩০ দিনের মধ্যে মৃত্যু সংক্রান্ত তথ্য নিবন্ধকের নিকট প্রদানের জন্য দায়ী থাকবেন।

এছাড়া নিম্নবর্ণিত ব্যক্তিগণ কোন ব্যক্তির মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য নিবন্ধকের নিকট তথ্য প্রেরণ করতে পারবেন:

কিভাবে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে আবেদন করবেন?

বাংলাদেশের সকল সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, রেজিস্টার অফিসে সরাসরি গিয়ে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ সংগ্রহের জন্য আবেদন করা যায়। অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধন সনদের জন্য আবেদন করা যায়। এছাড়াও, বিদেশে অবস্থানকালে বাংলাদেশের দূতাবাসে মৃত্যু নিবন্ধন করা যায়।

অনলাইনে মৃত্যু নিবন্ধনের জন্য জন্ম সনদ নম্বর প্রয়োজন।

মৃত্যু নিবন্ধন

মৃত ব্যক্তির নাম, মৃত্যুর তারিখ, মৃত্যুর স্থান, লিঙ্গ, বাবা-মায়ের নাম, স্বামী-স্ত্রীর নাম এসব তথ্য সরবরাহ করতে হয় এসব তথ্য নির্ধারিত কার্যালয়গুলোর ডাটাবেইজে ওঠার পর মৃত্যু নিবন্ধন সনদ দেয়া হয়। বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই এটি দেয়া হয়।

মৃত্যুর ৪৫ দিনের মধ্যে নিবন্ধন করলে কোন ফি লাগে না। এরপর থেকে পাঁচ বছর পর্যন্ত ২৫ টাকা, তারও পরে করলে ৫০ টাকা ফি নির্ধারণ করা রয়েছে।


মৃত্যু নিবন্ধন সংক্রান্ত প্রশ্নোত্তর

মৃত্যু নিবন্ধন কি?

মৃত্যু নিবন্ধন হল মানুষের মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ এবং নিবন্ধন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানুষের মৃত্যু সম্পর্কে জানানোর একটি কার্যকর মাধ্যম। মৃত্যু নিবন্ধনের মাধ্যমে সরকার এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মানুষের মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করে এবং নানান প্রয়োজনে সেগুলো ব্যবহার করে থাকে। এক কথায়, মৃত্যু নিবন্ধন হলো একটি কাগজ যা ব্যক্তির মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে থাকে এবং আইনানুগ সম্পত্তি বিতরণ, মৃত্যু বীমা, সমাজসেবা সুবিধা ইত্যাদি দেয়।

মৃত্যু নিবন্ধন কেন গুরুত্বপূর্ণ?

মৃত্যু নিবন্ধন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমে সরকার সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।

মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য কি কি কাগজপত্র লাগে?

মৃত্যু নিবন্ধন করার জন্য মৃত ব্যক্তির হাসপাতাল থেকে দেওয়া প্রত্যয়ন পত্র লাগবে। এছাড়াও স্থানীয় অফিসে যোগাযোগ করলে আরো বিস্তারিত জানতে পারবেন।

আবেদন করার কত দিন পর মৃত্যু সনদ প্রদান করা হয়?

সাধারণত, মৃত্যু নিবন্ধন করার পর মৃত্যু সনদ প্রদানের জন্য ৭-১০ দিন সময় লাগতে পারে। তবে এই সময়সীমা পরিবর্তিত হতে পারে

কিভাবে মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে পারি?

মৃত্যু নিবন্ধন সনদ পেতে হলে প্রথমেই আপনাকে স্থানীয় মৃত্যু নিবন্ধন অফিসে যেতে হবে। সেখান থেকেই আপনি বিস্তারিত জানতে পারবেন।

Exit mobile version