শবে কদরের রাত চেনার উপায়

হযরত আয়েশা রাযিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমরা রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে লাইলাতুল কদরের সন্ধান করো।”

লাইলাতুল কদর চেনার সহজ উপায়, শবে কদর চেনার আলামত, শবে কদরের রাত চেনার সহজ উপায়, লাইলাতুল কদর চেনার আলামত।

শবে কদরের রাত চেনার উপায়

কদরের রাত চেনার উপায় বিভিন্ন হাদিসগ্রন্থে কদরের রাত চেনার কিছু আলামতের কথা পাওয়া গেছে।

কদরের রাত চেনার উপায়

লাইলাতুল কদর বা শবে কদর বছরের শ্রেষ্ঠ রাত। এই রাত হাজার বছরের চেয়ে উত্তম। রমজানের শেষ দশকের কোনো এক রাতে এই পবিত্র রজনী। নির্দিষ্ট করে লাইলাতুল কদর চিহ্নিত করা হয়নি। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘তোমরা শেষ দশকের বেজোড় রাতে শবে কদর তালাশ করো।’ (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

কিন্তু বিশুদ্ধ হাদিসে কদরের রাত চেনার বেশ কিছু আলামতের কথা এসেছে। আসুন জেনে নিই সেগুলো কয়েকটি

প্রথম আলামত :

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘…ঐ রাতের আলামত বা লক্ষণ হলো, রাত শেষে সকালে সূর্য উদিত হবে তা উজ্জ্বল হবে। কিন্তু সে সময় (উদয়ের সময়) তার কোন তীব্র আলোকরশ্মি থাকবে না (অর্থাৎ দিনের তুলনায় কিছুটা নিষ্প্রভ হবে)। (মুসলিম, হাদিস : ১৬৭০; ইসলামিক ফাউন্ডেশন : ১৬৫৫)

দ্বিতীয় আলামত :

আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত, নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরের রাতটি হবে প্রফুল্লময়। না গরম, না ঠাণ্ডা। সেদিন সূর্য উঠবে লালবর্ণে, তবে দুর্বল থাকবে।’ (ইবনু খুযাইমাহ, হাদিস : ২১৯২)

তৃতীয় আলামত :

উবাদাহ ইবনু সামাত (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (ﷺ) বলেন, ‘লাইলাতুল কদর শেষ দশ রজনীতে রয়েছে। যে এই রাত্রে নিজের (আমলের) হিসাব নিতে দাঁড়াবে, আল্লাহ তাআলা তার পূর্বের এবং পরের পাপরাশি ক্ষমা করে দেবেন। আর এই রাত্রি আছে বেজর রাত্রিগুলোতে: নবম, সপ্তম, পঞ্চম, তৃতীয় এবং শেষ রাত।’

নবীজি আরও বলেন, ‘লাইলাতুল কদরের আলামত হচ্ছে, স্বচ্ছ রাত, যে রাতে চাঁদ উজ্জ্বল হবে, আবহাওয়ায় প্রশান্তি (সাকিনাহ) থাকবে। না ঠাণ্ডা, না গরম। সকাল পর্যন্ত (আকাশে) কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না। সে রাতের চাঁদের মতই সূর্য উঠবে (তীব্র) আলোকরশ্মি ছাড়া। শয়তান সেই সময় বের হয় না।’ (মুসনাদ আহমাদ, হাদিস : ২২৭৬৫)

চতুর্থ আলামত :

এক হাদিসে নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদর উজ্জ্বল একটি রাত। না গরম, না ঠাণ্ডা। সে রাতে কোনো উল্কাপিণ্ড দেখা যাবে না।’
(মাজমাউজ জাওয়ায়িদ : ৩/১৭৯; সহিহ আল-জামিঈ, হাদিস : ৫৪৭২)

পঞ্চম আলামত :

নবীজি (ﷺ) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদর রয়েছে সপ্তম, অথবা নবম, অথবা বিংশ, যে রাতে (পৃথিবীর) নুড়ি পাথরের চেয়ে বেশি সংখ্যক ফেরেশতাগণ জমিনে নেমে আসে।’ (মাজমাউল জাওয়ায়িদ, হাদিস : ৩/১৭৮; সহিহ আল-জামি, হাদিস : ৫৪৭৩)

লাইলাতুল কদর ইসলামিক কোন দিন?

রমজানের শেষ দশ রাতের বিজোড়-সংখ্যার রাতগুলো অন্যদের তুলনায় বেশি এবং ২৭ তারিখের রাত লাইলাতুল কদর হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

কদরের রাতে কি করতে হয়?

লায়লাতুল কদরে, আল্লাহ তায়ালা তাদের সকলের প্রতি তাঁর রহমত প্রসারিত করেন যারা আন্তরিকতার সাথে ক্ষমা প্রার্থনা করার জন্য তাঁর কাছে ফিরে আসে। লায়লাতুল কদর হল আমাদের পাপ ও ত্রুটির প্রতি চিন্তা করার, ক্ষমার জন্য আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কাছে ফিরে আসার, আমাদের আচরণকে উন্নত করার এবং আমাদের পাপের দিকে ফিরে আসা থেকে বিরত থাকার জন্য একটি দুর্দান্ত সময়।

Exit mobile version