পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে [২০২৫]

দেশের বাইরে যাবেন, অথচ পাসপোর্ট করা হয়নি। কিভাবে পাসপোর্ট করতে হয়, তাও জানেন না। তার আগে চলুন জেনে নিই, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। এই পোস্ট পড়ার পর পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগবে, কিভাবে কাগজ সাজাবেন, কত টাকা লাগবে, কোথায় টাকা জমা দিবেন ইত্যাদি সম্পর্কে আপনার একটি পরিষ্কার ধারণা আসবে।

পাসপোর্টের জন্য অনলাইনে E-Passport ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে। আবেদন করার সময়, নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র আর সার্টিফিকেটের সাথে মিল রেখে আবেদন করবেন। আপনার বাবা-মায়ের আইডি কার্ডে নাম যেমনই থাকুন না কেনো! আপনি আপনার আইডি কার্ড অনুযায়ী আবেদন করবেন।

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

আপনি যদি বিদেশ ভ্রমণের স্বপ্ন দেখেন বা, পড়াশোনা অথবা আবাসনের জন্য বিদেশ যেতে চান, প্রথম ধাপ হলো পাসপোর্ট করা। নিচের নির্দেশিকা আপনাকে দেখাবে “পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে” – পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থেকে শুরু করে পরের সব ধাপ।

পাসপোর্ট করতে কি কি কাগজপত্র লাগে?

পাসপোর্ট পোর্টালের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, পাসপোর্ট করতে জাতীয় পরিচয়পত্র, নাগরিক সনদপত্র, পেশা প্রমাণের কাগজ লাগবে। তবে, এক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে। তা হলো পাসপোর্ট আবেদনকারী ব্যক্তির বয়স, পেশা, বৈবাহিক অবস্থা, আগের পাসপোর্টে ভুল আছে কি না।

আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের নিচে হলে জন্মনিবন্ধন সনদ (ইংরেজি) লাগবে। সাথে বাবা-মায়ের NID ফটোকপি জমা দিতে হবে।
যদি আবেদনকারী ১৮–২০ বছর বয়সী হয়ে থাকেন, তাহলে NID বা জন্মনিবন্ধন সনদ (ইংরেজি) দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। এই ক্ষেত্রেও সাথে বাবা-মায়ের NID ফটোকপি জমা দিতে হবে।

আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের বেশি হলে অবশ্যই NID দিয়ে আবেদন করতে হবে। (বিদেশ থেকে আবেদন করলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইংরেজি গ্রহণযোগ্য)।

চলুন দেখে নেই, পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে। সাধারণত যে কাগজগুলো পাসপোর্ট অফিসে জমা দিতে হয় সেগুলো হলো:

মূলত এই কাগজগুলোই লাগে। পাসপোর্ট করার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অন্যান্য তথ্যাদি নিচে উল্লেখ করা হলো।

কিছু বিষয় মাথায় রাখুন

বাংলাদেশে অবস্থানরত পাসপোর্ট আবেদনকারীদের জন্য যে যে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আবেদনের সাথে সংযুক্ত করা লাগতে পারে তার সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দেয়া হলো।

১. জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন সনদ: আবেদনকারীর বয়স ১৮ বছরের কম হলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ (English Version) এবং ১৮ বছরের বেশি হলে জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ (English Version) প্রয়োজন হবে। আর আবেদনকারীর বয়স ২০ বছরের বেশি হলে অবশ্যই NID দিয়ে আবেদন করতে হবে। (বিদেশ থেকে আবেদন করলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইংরেজি গ্রহণযোগ্য)।

২. পাসপোর্ট ফি: আবেদন করার পর, অনলাইনে বা অফলাইনে পাসপোর্ট ফি পরিশোধ করতে হবে। আমাদের ওয়েবসাইটে পাসপোর্ট ফি’র পরিমাণ উল্লেখ করা আছে। বিস্তারিত দেখুন: পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগে

৩. ঠিকানা প্রমাণ: বর্তমান ঠিকানা প্রমাণের জন্য বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল বা এই জাতীয় কোনো ডকুমেন্টস সাথে রাখতে পারেন। 

৪. পেশাগত যোগ্যতা প্রমাণ: যদি আপনি স্টুডেন্ট, সরকারী চাকুরীজীবি, প্রাইভেট চাকুরীজীবি, ডাক্তার, প্রকৌশলী বা অন্য কোনো টেকনিক্যাল পেশার সাথে জড়িত হন, তাহলে সেই সংক্রান্ত প্রমাণপত্র সাথে রাখতে হবে। 

৫. বিবাহিতদের জন্য: বিবাহিত পুরুষদের ক্ষেত্রে, স্ত্রীর নাম উল্লেখ করতে হবে। আর নারীদের ক্ষেত্রে স্বামী বা পিতার নাম উল্লেখ করতে হবে। অনেক সময় কাবিননামাও চাইতে পারে।

৬. রি-ইস্যু: পুরাতন পাসপোর্ট রি-ইস্যু করার জন্য মূল পাসপোর্ট সাথে নিয়ে যেতে হবে। 

৭. অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য: অপ্রাপ্তবয়স্কদের (১৮ বছরের কম) জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ, পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয়পত্র ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রয়োজন হবে।

স্টুডেন্ট পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

যাদের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছরের মধ্যে তারা জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্ট করতে পারবে তবে, জন্ম নিবন্ধন অবশ্যই ইংরেজি ও অনলাইনে হতে হবে। তবে ২০ বছরের উপরের কেউ জন্ম নিবন্ধন দিয়ে আবেদন করতে পারবেন না। (বিদেশ থেকে আবেদন করলে জন্মনিবন্ধন সনদ ইংরেজি গ্রহণযোগ্য)।

১। প্রিন্ট সামারি (অ্যাপয়েন্টমেন্ট কপি)
২। অ্যাপ্লিকেশন সামারি (৩ পেজ)
৩। পেমেন্ট স্লিপ (এ চালান)
৪। এনআইডি/জন্ম নিবন্ধন সনদ (মেইন ও ফটোকপি)
৫। নাগরিক সনদ
৬। যেকোনো বিলের কাগজ পত্র (বিদ্যুৎ/গ্যাস/পানি)
৭। পেশার কাগজপত্র (স্টুডেন্ট আইডি, সর্বশেষ সার্টিফিকেট ইত্যাদি)
৮। বাবা-মার এনআইডি কপি (যাদের বয়স ১৮ এর নিচে বা যাদের এনআইডি নেই তাদের জন্য প্রযোজ্য)

নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের উপরে হলে

নতুন আবেদনকারীদের ক্ষেত্রে  ১৮ বছরের নীচে হলে

রি-ইস্যু পাসপোর্ট আবেদন কারীদের জন্য

পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে – বিস্তারিত আবেদন প্রক্রিয়া

আপনি যদি প্রথমবার পাসপোর্ট করতে যাচ্ছেন অথবা প্রক্রিয়াটি নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন, তাহলে এই পোস্ট আপনাকে ধাপে ধাপে গাইড করবে।

পাসপোর্ট আবেদনের পর আপনার প্রস্তুতি

আপনার সব কাগজপত্র একবার আরও যাচাই করে নিন, দেখুন সব কিছু ঠিকঠাক আছে কি দেখতে ভুলবেন না। অ্যাপয়েন্টমেন্ট স্লিপ, NID মূল ও ফটোকপি, জন্ম নিবন্ধন—all set? তাহলে বিদেশ যাত্রা আর দূরে নেই!

আবেদন প্রক্রিয়া: ধাপে ধাপে বিস্তরণ

১। অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট বুকিং

২। ফি পরিশোধ

আবেদনের পরে ফি পরিশোধ করতে হবে। আপনি অনলাইনে বা অফলাইনে পাসপোর্টের টাকা জমা দিন।

পাসপোর্টের ফি কাঠামোঃ

বাংলাদেশে ৪৮ পৃষ্ঠার ১০ বছর মেয়াদী পাসপোর্ট (৫,৭৫০ টাকা) সবচেয়ে জনপ্রিয়। অধিকাংশ মানুষই এ অপশনে আবেদন করেন।

৩। কাগজপত্র জমা ও বায়োমেট্রিক গ্রহণ

সবশেষে, আপনাকে একটি ডেলিভারি স্লিপ দেওয়া হবে। এটা যত্ন করে সংরক্ষণ করুন। পাসপোর্ট ডেলিভারির দিন এটা দেখিয়ে পাসপোর্ট আনতে হবে।

৪। প্রসেসিং ও পাসপোর্ট ডেলিভারি

প্রসেসিং সময়: সাধারণত: ১৫–২১ কার্যদিবস, জরুরি: ৭–১০ কার্যদিবস, অতি জরুরি: ৩–৫ কার্যদিবস।

৫। আবেদন শেষে করণীয়

আপনার পাসপোর্ট ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত হলে, আপনাকে SMS বা ইমেইল বা মেইলে জানিয়ে দেওয়া হবে। তখন পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ নিয়ে আবার জেলার আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যেতে হবে। তারপর ডেলিভারি স্লিপ জমা দিয়ে সিরিয়ালে অপেক্ষা করবেন। আর তারপরই পেয়ে যাবেন আপনার কাঙ্ক্ষিত পাসপোর্ট।

শেষ কথা

এখন আপনি জানেন “পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে” আর কিভাবে সহজে আবেদন করতে হয়। তাই দেরি না করে সব প্রয়োজনীয় কাগজ এক জায়গায় গোছান, আর epassport.gov.bd-এ ঢুকে আজই আবেদন করুন।

Exit mobile version