টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম [2025]

আপনার সন্তানের জন্য টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন করতে চান? ২০২৫ সালে বাংলাদেশে টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া, সময়সূচি, যোগ্যতা, অনলাইন আবেদন ও টিকাদান কেন্দ্রের সম্পূর্ণ তথ্য এখানে পাবেন। দ্রুত নিবন্ধন করুন এবং সুরক্ষিত থাকুন।

সারা দেশে টাইফয়েড টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে ১ সেপ্টেম্বর থেকে, যা পরিচালিত হবে সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (EPI)-এর আওতায়। এবার ৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশু এক ডোজ ইনজেকটেবল টাইফয়েড টিকা পাবে।

টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন করার নিয়ম

টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন ২০২৫ সালের অন্যতম স্বাস্থ্য উদ্যোগ, যা সারা দেশে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য শুরু হয়েছে। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (EPI)-এর আওতায় এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য হলো শিশুদের টাইফয়েড জ্বর থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা প্রদান। অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সকল যোগ্য শিশুকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

গত ১ আগস্ট ২০২৫ তারিখ থেকে টিকা গ্রহণের জন্য অনলাইনে টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে, যা চলবে টিকাদান শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।

টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন
টাইফয়েড টিকা গ্রহণের প্রক্রিয়া

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় পাঁচ কোটি শিশু-কিশোররা বিনামূল্যে টিকা পাবে।

গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহায়তায় টাইফয়েডের টিকা দেশে আনা হয়েছে। এক ডোজের ইনজেকটেবল এই টিকা তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। টিকা পেতে অনলাইন নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। ফোন থেকেই রেজিস্ট্রেশন করা যাচ্ছে।

কয়েক ধাপে টাইফয়েড টিকা নিবন্ধন

টাইফয়েডের টিকাদান কর্মসূচি মোট ১৮ দিন চলবে। প্রথম ১০ দিন স্কুলে ক্যাম্প করে টিকা দেওয়া হবে। স্কুলে টিকা না নেওয়া শিশুরা পরের ৮ দিন টিকাদান কেন্দ্রে টিকা পাবে।

রেজিস্ট্রেশনের পর ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করে নিতে হবে। টিকা গ্রহণের সময় এই কার্ড দেখাতে হবে।

বাংলাদেশ সরকার দেশব্যাপী টাইফয়েড জ্বর প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আগামী ১ থেকে ১৮ সেপ্টেম্বর (সম্ভাব্য তারিখে) সারাদেশে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের জন্য টাইফয়েড ভ্যাকসিন (টিসিভি) প্রদান করা হবে।

কোথায় দেওয়া হবে?

🔹 রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া:

রেজিস্ট্রেশনের জন্য VAXEPI অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইনে নিবন্ধন করে রেজিস্ট্রেশন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। তবে জন্মনিবন্ধন সনদ ছাড়াও টিকা নেওয়া যাবে।

টাইফয়েডের টিকাদান কার্যক্রমের সময়সূচি

কারা কারা এই টিকা পাবেন?

ভ্যাকসিনের ধরন ও সুরক্ষা

সেপ্টেম্বরের মাসের প্রথম ১০ কর্মদিবসে স্কুলে ক্যাম্প স্থাপন করে শিক্ষার্থীদের টাইফয়েড টিকা দেওয়া হবে। এরপর, যেসব শিশু ক্যাম্পে উপস্থিত হতে পারবে না কিংবা স্কুলে যায় না – তাদের জন্য পরবর্তী ৮ দিন স্থানীয় ইপিআই কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেওয়ার সুযোগ থাকবে।

জন্ম নিবন্ধন সনদ না থাকলেও শিশুরা টিসিভি টিকা নিতে পারবে। এই ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করা যাবে, এবং হাতে লিখে টিকা নেওয়ার তথ্য দেওয়া হবে।

ভ্যাকসিনটি সরবরাহ করছে গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, যা এক ডোজেই ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা প্রদান করতে সক্ষম।

টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন অনলাইন

অনলাইন টাইফয়েড টিকার রেজিস্ট্রেশন করার জন্য https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv এই ওয়েবসাইটে গিয়ে জন্ম নিবন্ধন নম্বর বা মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। জন্ম নিবন্ধন থাকলে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোডও করা যাবে।

অনলাইন নিবন্ধন প্রক্রিয়া

টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন - ২০২৫

এই টিকাটি নিরাপদ, কার্যকর এবং আপনার সন্তানকে টাইফয়েড জ্বর ও তার জটিলতা থেকে সুরক্ষা দেয়। তাই দ্রুত রেজিস্ট্রেশন করুন এবং সময়মত টাইফয়েডের টিকা দিয়ে আপনার বাবুকে নানা জটিলতা থেকে বাচান।

স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার গুরুত্ব

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য অনুযায়ী, টাইফয়েড জ্বর স্যালমোনেলা টাইফি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ, যা দূষিত পানি ও খাবারের মাধ্যমে ছড়ায়। উপসর্গের মধ্যে থাকে – দীর্ঘস্থায়ী জ্বর, মাথাব্যথা, বমি, ক্ষুধামন্দা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।

উপসর্গগুলো প্রায়ই অস্পষ্ট থাকে এবং অনেক ক্ষেত্রে অন্যান্য জ্বরজনিত রোগ থেকে আলাদা করা কঠিন হয়। এর লক্ষণ প্রায়ই অস্পষ্ট হয়, তাই প্রতিরোধই সর্বোত্তম উপায়। প্রাথমিক পর্যায়ে লক্ষণ অস্পষ্ট থাকায় অনেক সময় টাইফয়েড শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়ে।

WHO-এর সুপারিশ অনুযায়ী, শিশুদের ছোটবেলায় এই টিকা নেওয়া অত্যন্ত কার্যকর একটি প্রতিরোধমূলক পদক্ষেপ।

প্রথমবার টাইফয়েডের টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু

দেশে প্রথমবারের মতো টাইফয়েড প্রতিরোধে টিকা দেবে সরকার। সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই)–এর আওতায় আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৯ মাস থেকে ১৫ বছর ১১ মাস ২৯ দিন বয়সী প্রায় ৫ কোটি শিশুকে এই টিকা দেওয়া হবে।

প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে টাইফয়েডের টিকা পাবে ৫ কোটি শিশু, টিকা দেওয়া শুরু হবে ১লা সেপ্টেম্বর থেকে। আর টিসিভি টিকার রেজিস্ট্রেশন শুরু হয়েছে গত ১ আগস্ট থেকে।

নিবন্ধনের পর টিসিভি ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে নিবন্ধন করলে সরাসরি ভ্যাকসিন কার্ড পাওয়া যাবে।

টিকা পেতে https://vaxepi.gov.bd/registration/tcv–এ নিবন্ধন করতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন হবে ১৭ সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন সনদের নম্বর। 

ইপিআই কর্তৃপক্ষ জানায়, এক ডোজের ইনজেকটেবল এই টিকা ৩ থেকে ৭ বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দেবে। ভ্যাকসিনটি এসেছে গ্যাভি ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের সহায়তায়।

রোগের তীব্রতা ভিন্ন হতে পারে; গুরুতর ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দিতে পারে কিংবা মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে। টাইফয়েড মূলত এমন অঞ্চলে বেশি হয় যেখানে স্যানিটেশন ব্যবস্থা দুর্বল এবং নিরাপদ পানির অভাব রয়েছে।

বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর আনুমানিক ৯০ লাখ মানুষ টাইফয়েডে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটে এই রোগে।

টাইফয়েডের টিকা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই

টাইফয়েডের টিকা নিয়ে অনেক অভিভাবক দ্বিধায় আছেন। বিশেষ করে সাইড ইফেক্ট নিয়ে শঙ্কা রয়েছে অনেকের মনে।

গ্যাভি সিএসও স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ার ডা. নিজাম উদ্দিন আহমেদ টিবিএসকে বলেন, “টাইফয়েড ভ্যাকসিন নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। এটি শতভাগ নিরাপদ। পৃথিবীর অনেক দেশে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। আগে দেশে এই ভ্যাকসিন বেসরকারি পর্যায়ে কিনে দেওয়া হতো, এবার সরকার বিনামূল্যে প্রায় সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি শিশুকে দেবে।”

“যেকোনো ওষুধের মতো এরও কিছু সাইড ইফেক্ট থাকতে পারে, তবে বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। এটি একটি নিরাপদ ভ্যাকসিন,” যোগ করেন তিনি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বর্তমানে টাইফয়েড জ্বর নিয়ন্ত্রণে স্থানীয়ভাবে স্থায়ী (এনডেমিক) এবং প্রাদুর্ভাব (এপিডেমিক) উভয় পরিস্থিতির জন্য তিন ধরনের ভ্যাকসিন সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে টাইফয়েড কনজুগেট ভ্যাকসিন (টিসিভি) সব বয়সের জন্য রুটিন টিকাদান কর্মসূচিতে ব্যবহারে অগ্রাধিকার পাচ্ছে, কারণ এটি উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সৃষ্টি করে এবং কম বয়সী শিশুদের জন্য উপযোগী এবং দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা দেয়।

সম্ভাব্য প্রশ্নোত্তর (FAQ)

প্রশ্ন: জন্ম নিবন্ধন না থাকলে কি রেজিস্ট্রেশন করা যাবে? উত্তর: হ্যাঁ, বাবা-মায়ের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে রেজিস্ট্রেশন সম্ভব।

প্রশ্ন: টিকার জন্য টাকা লাগবে কি? উত্তর: না, সরকারি এই টিকা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে প্রদান করা হবে।

প্রশ্ন: স্কুলের বাইরে টিকা নেওয়ার সুযোগ থাকবে কি? উত্তর: হ্যাঁ, দ্বিতীয় ধাপে স্থানীয় ইপিআই কেন্দ্রে নেওয়া যাবে।

সমাপনী

২০২৫ সালের টাইফয়েড টিকা রেজিস্ট্রেশন শিশুদের জন্য একটি জীবনরক্ষাকারী পদক্ষেপ। সময়মতো নিবন্ধন করে টিকা গ্রহণ করলে টাইফয়েডের ঝুঁকি বহু গুণ কমে যাবে। অভিভাবকদের প্রতি অনুরোধ—আজই নিবন্ধন সম্পন্ন করে সন্তানদের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করুন। পোস্টটি শেয়ার করে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিন।

সূত্র: যুগান্তর, বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, চ্যাট জিপিটি।

Exit mobile version