লো-টেক প্লান্টেড ট্যাংক এর খুঁটিনাটি
Low-Tech Planted Tank বলতে সাধারণত খুব বেশী মেন্টেনেন্স বা ঝামেলা ছাড়াই লিমিটেড কিছু প্ল্যান্টস দিয়ে প্ল্যান্টেড একুরিয়াম বোঝানো হয়। লো-টেক অ্যাকুরিয়ামে লাইট লো-মিডিয়াম থাকে, কার্বন ডাই অক্সাইড দেয়া হয়না এবং সাবস্ট্রেট হিসেবে ক্রাশড স্টোন, স্যান্ড ব্যবহার করা হয়। অবশ্য স্যান্ডের নিচে গার্ডেন সয়েলও দেয়া যেতে পারে। চলুন, কিভাবে স্যান্ডে প্ল্যান্টেড ট্যাংক করা যায় দেখা যাক।
আপনি যদি অ্যাকোয়াস্ক্যাপিং সম্পর্কে আগ্রহী হন, আবার যদি একইসাথে আপনার ট্যাঙ্কের যত্ন নেওয়ার জন্য হাতে বেশি সময় না থাকে। তবে, অ্যাকুরিয়াম আপনার জন্য একটি বিরাট সমস্যার কারণ হতে পারে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন যে, মাছ সহ একটি অ্যাকুরিয়ামের জন্য সময়মতো তত্ত্বাবধান, সাপ্তাহিক পানি পরিবর্তন এবং বিভিন্ন সরঞ্জামগুলির সমন্বয় প্রয়োজন হয়।
যদি এই বিষয়গুলো আপনার কাছে কঠিন বলে মনে হয়, তবুও আপনি চান আপনার ঘরে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম থাকুক। তবে, আপনি আপনার প্রথম অ্যাকোয়ারিয়াম হিসেবে Low-tech planted tank স্থাপন করার জন্য প্রস্তুত হতে পারেন।
লো-টেক প্লান্টেড ট্যাংক মানে কি?
একটি লো-টেক প্ল্যান্টেড ট্যাঙ্ক হচ্ছে এমন ধাঁচের অ্যাকোয়ারিয়াম যেগুলোর সামান্য রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। অন্যান্য অ্যাকোয়ারিয়ামের মতো আপনাকে প্রায়শই পানি পরিবর্তন করতে হবে না বা সরঞ্জামগুলি নিয়ে চিন্তা করতে হবে না। এমনকি লো-টেক প্লান্টেড ট্যাংকের গাছপালা, আলো এবং সাবস্ট্রেটের সংমিশ্রণ ট্যাঙ্কটিকে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সহজ করে তোলে।
Low-Tech Planted Tank Guide
Tank Selection
প্রথমেই লাগবে ট্যাংক। ট্যাংকের দৈর্ঘ্য প্রস্থ যা-ই হোক, উচ্চতা ১৮ ইঞ্চি এর বেশী না হলে ভালো হয়। মনে রাখতে হবে আমরা লো-মিডিয়াম লাইট ব্যবহার করবো।
Filtration System
ফিল্ট্রেশনের অনেক অপশন আছে এবং ফুল সেটাপের বাজেট কত হবে অনেকখানি নির্ভর করবে কি ফিল্টার ব্যবহার করছেন তার ওপর। স্পঞ্জ ফিল্টার, পাওয়ার ফিল্টার, টপ ফিল্টার, ক্যানিস্টার ফিল্টার এবং সাম্প- যেকোনো এক বা একাধিক ফিল্ট্রেশন বেছে নিতে পারেন। দাম পড়বে সাইজভেদে ৮০-১০০০০ টাকা পর্যন্ত।
Substrate
স্যান্ড, ক্রাশড স্টোন সাবস্ট্রেট হিসেবে খুবই কম ঝামেলার। জিরো সাইজড ক্রাশড স্টোন/হোয়াইট স্যান্ড কেজি প্রতি ৭০ টাকায় কাঁটাবনে পাওয়া যাবে। তাছাড়াও, রিভার স্যান্ড বা সিলেট স্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন যেটা দেখতে বাদামী রংয়ের, কন্সট্রাকশন সাইটে প্রায়ই দেখা যায়। ইট বালুর দোকানে সিলেট স্যান্ড ৫০ কেজির এক বস্তার দাম ৫০ টাকা।
Plants Selection
Cabomba, Hornwort, Egeria Densa, Jungle Val, Guppy grass, micra, Amazon sword, Oriental sword, hydrilla, Pennywort, Apongaton Ulvaceous, Limnophila Aquatica ইত্যাদি প্ল্যান্টস সহজেই স্যান্ড সাবস্ট্রেটে গ্রো করবে। ফার্টিলাইজার দিলে ফাস্ট গ্রোথ হবে, না দিলেও ক্ষতি নেই। এই প্ল্যান্টসগুলা ১০টাকা থেকে ৪০ টাকা প্রতি পিস দামে পাওয়া যাবে। তাছাড়াও, Anubias, Fern, Moss ইত্যাদি প্ল্যান্টস রক বা বগে অ্যাটাচ করে দিতে পারেন। এই তিনটা প্ল্যান্টসের অনেক জাত আছে এবং এইগুলাকে সাবস্ট্রেটে পুঁতে দেয়া যাবেনা। আনুবিয়াস ২৩০-৩৫০ টাকা পট, ফার্ণ ২০০-৩০০ টাকা পট এবং মস ১৫০-২০০ টাকা প্যাকেট।
Decoration
ন্যাচারাল লুক আনার জন্য প্ল্যান্টেড ট্যাংকে বগ বা রক ব্যবহার করতে পারেন। তাছাড়াও আপনার ইচ্ছামত ডেকোরেশন জিনিসপত্র ব্যবহার করতে পারেন শুধু খেয়াল রাখতে হবে শার্প এজ যেন না থাকে এবং ডেকোরেশন বস্তুটি যেন পানিতে কোনরুপ রাসায়নিক বিক্রিয়া না করে।
Light
প্ল্যান্টসের গ্রোথ ভালো চাইলে মিডিয়াম লাইট দেয়া লাগবে। হাই লাইট দেয়া যাবেনা, তাতে অ্যালজি গ্রোথের সমূহ সম্ভাবনা। লো- মিডিয়াম লাইট বলতে প্রায় ২-৩ ওয়াট পার গ্যালন ধরা হয়। অর্থাৎ প্রতি ৩.৭ লিটার পানির জন্য ২-৩ ওয়াটের লাইট।
Low-tech with garden soil
এক ইঞ্চি এঁটেল মাটি বা ল্যাটেরাইট (এটা অপশনাল), তার উপর ২ ইঞ্চি গার্ডেন সয়েল (বাগানের সার ছাড়া দো-আঁশ মাটি) এবং তার উপর হাফ ইঞ্চি সিলেট স্যান্ডের লেয়ার দিয়ে দেবেন। লাইটিং, ফিল্ট্রেশন সব স্যান্ড ওনলি ট্যাংকের মতই হবে। সুবিধা হলো, এইক্ষেত্রে প্ল্যান্টস চয়েস অনেক বেশী। কার্পেটিং প্ল্যান্টস হিসেবে Sagittaria, Dwarf Sagittaria, Micra এইগুলা দেয়া যায়। এছাড়াও Ludwigia Repens, Rotala Rotundifolia, Hygrophila Polyspherma, Hygrophila Difformis, Bacopa Caroliniana, Bacopa Monneiri, Stargrass, অনেক ধরনের Cryptocoryne, Ambulia, Crinum Natans, Crinum Thaianum, Hygrophila Corymbosa, Staurogyne Repens ইত্যাদি প্ল্যান্টস দিতে পারেন। তাছাড়াও আগের স্যান্ড অনলির প্ল্যান্টসগুলাও সয়েলে অনেক বেটার হবে।
এই হলো মোটামুটি লো-টেক প্লান্টেড ট্যাংকের মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট। একটা ২৪x১২x১২ লো-টেক প্লান্টেড ট্যাংক ২০০০ টাকার মধ্যেই করে ফেলা সম্ভব। আর দেরী কেন? শার্টের হাতা গুটিয়ে কাজে নেমে পড়ুন।
নতুন অ্যাকুরিয়ামে মাছ ছাড়লে মাছ বাঁচতে পারেনা। একবার সবকিছু সেট আপ হয়ে গেলে, আপনাকে কয়েক সপ্তাহের জন্য আপনার ট্যাঙ্কটিকে মাছ মুক্ত রাখতে হবে। ততক্ষণ আপনি ফিল্টার ছেড়ে অল্প অল্প পরিমাণে মাছের খাবার দিবেন। এটাকে ঘোস্ট ফিডিং বলা হয়। ঘোস্ট ফিডিংয়ের মাধ্যমে আপনার অ্যাকুরিয়ামে নাইট্রোজেন সার্কেল সংঘটিত হবে। কয়েক সপ্তাহ পর, আপনি মাছ ছাড়তে পারেন। এতে মাছ সুস্থ থাকবে।
Post Reference
এই আর্টিকেলটি বাংলাদেশের অ্যাকুয়ারিয়াম রিলেটেড ফেসবুক গ্রুপ Bangladesh Aquarists থেকে সংগৃহীত। Shamsun Arefin এই আর্টিকেলটির মেধাস্বত্ব বহন করছেন। মূল আর্টিকেল পড়তে এখানে ক্লিক করুন।
Reference:
Shamsun Arefin, Bangladesh Aquarists