রোজা রেখে ইনজেকশন নেয়া যাবে কি?

রোজা রেখে ইনজেকশন নেয়া যাবে কি? কোন কোন ইনজেকশন ক্ষেত্রে নেয়া যাবে আর কখন নেয়া যাবে না তা জানতে এই পোস্টটি পড়ুন ও নিচের ভিডিওটি দেখুন।
রোজা রেখে ইনজেকশন নেওয়া যাবে কি? ইসলাম কী বলে?
রমজান মাসে রোজাদার ব্যক্তি দিনের বেলায় খাদ্য ও পানীয় থেকে বিরত থাকেন। এই সময় কোনো কিছু শরীরে প্রবেশ করানো নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে। বিশেষ করে ইনজেকশন নিয়ে অনেকের দ্বিধা থাকে যে, ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙবে কিনা।
তাই আজকের আলোচনা—রোজা রেখে ইনজেকশন নেওয়া যাবে কি? (roja rekhe injection dewa jabe ki)
রোজা রেখে ইনজেকশন দেয়া যাবে কি
অনেকেই জানতে চান যে, রমজান মাসে ইনজেকশন পুশ করা যায় কি-না। জি, রমজান মাসে আপনি ইনজেকশন নিতে পারবেন। যদি সে ইনজেকশনটা সাধারণ পেইন কিলার ইঞ্জেকশন হয়। ব্যথানাশক অথবা অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশন হয়। এ জাতীয় কোনো মেডিকেশন বা ভ্যাক্সিন জাতীয় ইঞ্জেকশন হলে, আপনার রোজা ভাঙ্গবে না ইনশাআল্লাহ।
কিন্তু, ঐ ইনজেকশন যদি স্বাভাবিক ইনজেকশন না হয়ে কোনো এনার্জেটিক ইনজেকশন হয়। যেটার মধ্যে ফুড সাপ্লিমেন্টারি আছে। অথবা যেটার মধ্যে নিউট্রিসিয়াস, নিউট্রিশন ভ্যালু আছে বা পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ইনজেকশন; এখন এমনও অনেক ফুড সাপ্লিমেন্টারি ভ্যাক্সিন বা ইনজেকশন আবিষ্কার হয়েছে। যেটা আপনার দেহে পুশ করলে, তিন-চারদিন আপনার ক্ষুধা লাগবে না, পুষ্টি শূণ্যতায়ও ভুগবেন না। এটা এতো এনার্জেটিক ইনজেকশন। এই জাতীয় ইনজেকশন দিলে রোজা ভেঙ্গে যাবে। – মিজানুর রহমান আজহারী।
শারীরিক শক্তি বৃদ্ধি ছাড়া অন্য যে কোনো কারণে ইনজেকশন নিলে রোজা নষ্ট হবে না। চাই তা মাংসে নেওয়া হোক বা রগে নেওয়া হোক। কারণ, ইনজেকশনের সাহায্যে দেহের অভ্যন্তরে প্রবেশকৃত ওষুধ মাংস বা রগের মাধ্যমেই প্রবেশ করানো হয়ে থাকে, যা অস্বাভাবিক প্রবেশপথ। তাই এটি রোজা ভঙ্গের গ্রহণযোগ্য কারণ নয়।
(ইবনে আবিদিন, খণ্ড : ০২, পৃষ্ঠা : ৩৯৫; ইবনু নুজাইম, খণ্ড : ২, পৃষ্ঠা : ২৭৮; আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল, খণ্ড : ০৩, পৃষ্ঠা : ২১৪)
রোজা রেখে ইনসুলিন নেওয়া যাবে কি
ইনসুলিন নিলে রোজা নষ্ট হয় না। কারণ ইনসুলিন রোজা ভঙ্গ হওয়ার গ্রহণযোগ্য রাস্তা দিয়ে প্রবেশ করানো হয় না এবং গ্রহণযোগ্য খালি জায়গায় প্রবেশ করে না।
(ইবনে আবিদিন, খ. ৩, পৃ. ৩৬৭; (খ) ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান, পৃ. ৩২৭)
রোজা রেখে ইনজেকশন পুশের বিধান
ইসলামি আলোচক হিসেবে জনপ্রিয় মিজানুর রহমান আজহারী সাহেবের বক্তব্য অনুসারে, রোজা থাকা অবস্থায় ইনজেকশন গ্রহণ সংক্রান্ত মাসআলা দেখে নিন।
আশা করি, এই ভিডিওটি আপনার প্রশ্নের উত্তর দিতে সহায়ক হবে।
ইনজেকশন নিলে কি রোজা ভাঙে?
ইসলামিক বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণভাবে ইনজেকশন নিলে রোজা ভাঙে না। কারণ ইনজেকশনের মাধ্যমে যে ওষুধ শরীরে প্রবেশ করে, তা খাদ্য বা পানীয়ের বিকল্প হিসেবে কাজ করে না। এটি সরাসরি পাকস্থলীতে যায় না, বরং রক্তনালীর মাধ্যমে শরীরে শোষিত হয়। তাই, রোজার সময় ইনজেকশন নেওয়া হলে রোজা ভঙ্গ হবে না।
কোন ধরনের ইনজেকশন নেওয়া যাবে?
- ভিটামিন ইনজেকশন: ভিটামিন ইনজেকশন নেওয়া যাবে, কারণ এটি খাবারের বিকল্প নয়।
- ভ্যাকসিন: যে কোনো রোগের প্রতিষেধক (যেমন: করোনা ভ্যাকসিন) নেওয়া যাবে।
- সাধারণ রোগের ইনজেকশন: অসুস্থ হলে রোজা রেখে সাধারণ রোগের ইনজেকশন নেওয়া যায়।
কোন ক্ষেত্রে ইনজেকশন না নেওয়াই ভালো
- গ্লুকোজ ইনজেকশন: গ্লুকোজ ইনজেকশন সাধারণত খাবারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত হয়, তাই এটি পরিহার করা উচিত।
- স্যালাইন: স্যালাইন নিলে রোজা ভেঙে যেতে পারে, তাই এটা এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
জরুরি অবস্থায় করণীয়
যদি কোনো ব্যক্তি অসুস্থ হন এবং জরুরি ভিত্তিতে ইনজেকশন নিতে হয়, তবে রোজা রাখা অবস্থায় ইনজেকশন নিতে কোনো বাধা নেই। সেক্ষেত্রে রোজা না রাখারও অবকাশ রয়েছে, তবে পরবর্তীতে কাজা করে দিতে হবে।
রোজার সময় ইনজেকশন বিষয়ক কিছু জরুরি তথ্য
- ইনজেকশন রোজা ভঙ্গের কারণ নয়, যেহেতু এটি খাদ্যনালী দিয়ে প্রবেশ করে না।
- বিশেষজ্ঞ আলেমরা ইনজেকশন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন, যদি তা জীবন রক্ষাকারী হয়।
- অপ্রয়োজনীয় ইনজেকশন পরিহার করা উচিত, বিশেষত যেগুলো খাদ্য জাতীয়।
সুতরাং, রোজা রেখে প্রয়োজনে ইনজেকশন নেওয়া যেতে পারে। তবে, রোজার পবিত্রতা রক্ষার্থে অপ্রয়োজনীয় ইনজেকশন পরিহার করাই উত্তম।
Keywords: রোজা রেখে ইনজেকশন (roja rekhe injection), রোজা রেখে ইনজেকশন নেওয়া যাবে কি (roja rekhe injection dewa jabe ki), ইনজেকশন (injection), রোজা (roja), রমজান (ramadan), ইসলামিক বিধান (islamic bidhan)