রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া
রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া। এই আর্টিকেলে রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এখানে উপস্থাপন করা হয়েছে।
রোজার নিয়ত ও ইফতারের দোয়া
রোজার নিয়ত
সুবহে সাদিকের পূর্বে মনে মনে এ নিয়ত করবে যে, ‘আমি আজ রোযা রাখব’ অথবা দিনে আনুমানিক ১১টার পূর্বে মনে মনে এরূপ নিয়ত করবে যে, আমি আজ রোযা রাখলাম। মুখে নিয়ত করা জরুরী নয়; বরং মুস্তাহাব।
রোজার নিয়ত:
نَوَيْتُ اَنْ اُصُوْمَ غَدًا مِّنْ شَهْرِ رَمْضَانَ الْمُبَارَكِ فَرْضَا لَكَ يَا اللهُ فَتَقَبَّل مِنِّى اِنَّكَ اَنْتَ السَّمِيْعُ الْعَلِيْم
আরবি উচ্চারণ: ‘নাওয়াইতু আন আছুম্মা গাদাম মিন শাহরি রমাজানাল মুবারাকি ফারদাল্লাকা, ইয়া আল্লাহু ফাতাকাব্বাল মিন্নি ইন্নিকা আনতাস সামিউল আলিম।’
বাংলায় অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আগামীকাল পবিত্র রমজানের তোমার পক্ষ থেকে নির্ধারিত ফরজ রোজা রাখার ইচ্ছা পোষণ করলাম। অতএব তুমি আমার পক্ষ থেকে আমার রোযা কবুল করো, নিশ্চয়ই তুমি সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞানী।’
সাহরী ও ইফতার
ইফতার ও সাহরি রমজানের অন্যতম ইবাদত। রাতের শেষ ভাগে সাহরি খাওয়া যেমন সুন্নাত ও কল্যাণের তেমনি দ্রুত ইফতার করায় রয়েছে বিশেষ কল্যাণ। এ কল্যাণ পেতে রোজাদারের ইফতার-সাহরিতে রয়েছে বিশেষ দোয়া ও নিয়ম।
সাহরী খাওয়া ও ইফতার করা সুন্নাত। সামান্য খাদ্য বা পানি পান করলেও সুন্নাত আদায় হবে। খেজুর দ্বারা ইফতার করা মুস্তাহাব।
আপনার জন্য নির্বাচিত: সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৩
ইফতারের আগ মুহূর্তে ইসতেগফার পাঠ
اَسْتَغْفِرُ اللهَ الْعَظِيْم – اَلَّذِىْ لَا اِلَهَ اِلَّا هُوَ اَلْحَيُّ الْقَيُّوْمُ وَ اَتُوْبُ اِلَيْهِ لَا حَوْلَ وَ لَا قُوَّةَ اِلَّا بِاللَّهِ الْعَلِىِّ الْعَظِيْم
বাংলায় উচ্চারণ: ‘আসতাগফিরুল্লাহাল আজিম, আল্লাজি লা ইলাহা ইল্লাহু আল-হাইয়্যুল ক্বাইয়্যুম, ওয়া আতুবু ইলাইহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়্যাতা ইল্লা বিল্লাহিল আলিয়্যিল আজিম।’
ইফতার করার দোয়া
বিসমিল্লাহ বলে ইফতার শুরু করবেন এবং পরে এই দু’আ পড়বেন, আল্লাহুম্মা লাকা সুম ওয়া আলা বিষক্বিকা আফতারভু”।
بِسْمِ الله – اَللَّهُمَّ لَكَ صُمْتُ وَ عَلَى رِزْقِكَ وَ اَفْطَرْتُ
বাংলায় উচ্চারণ: ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু, ওয়া আ’লা রিযক্বিকা আফত্বারতু।’
বাংলায় অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য রোযা রাখলাম এবং তোমারই দেয়া রিষিক দ্বারা ইফতার করলাম। (সুনানে আবু দাউদ ২৩৫৮)
বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যথাসময় ইফতার করার জন্য বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘মানুষ যতদিন ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেরি না করে ইফতার করবে; ততদিন তারা কল্যাণ লাভ করবে।’
ইফতারের পর বা ইফতার করার সময়ের দোয়া
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইফতার করাকালীন সময়ে বলতেন-
ذَهَبَ الظَّمَاءُ وَابْتَلَتِ الْعُرُوْقُ وَ ثَبَتَ الْأَجْرُ اِنْ شَاءَ اللهُ
বাংলায় উচ্চারণ: ‘জাহাবাজ জামাউ; ওয়াবতালাতিল উ’রুকু; ওয়া ছাবাতাল আঝরূ ইনশাআল্লাহ।’
বাংলায় অর্থ: ‘পিপাসা দূর হল (ইফতারের মাধ্যমে), শিরা-উপসিরা সিক্ত হলো এবং যদি আল্লাহ চান সাওয়াবও স্থির হলো।’ (আবু দাউদ, মিশকাত)
ইফতার করার সময় করণীয়
- সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করা।
- ইফতারের সময় অন্য কাজে ব্যস্ত না হয়ে ইফতার করা।
- ইফতারের সময় বেশি বেশি দোয়া ও ক্ষমা প্রার্থনা করা।
- খেজুর, সাদা পানি কিংবা দুধ দিয়ে ইফতার করে মাগরিবের নামাজ জামাআতে পড়া।
- ইফতারে দেরি করে জামাআত তরক না করা।
- ইফতারের সময় ভারী খাবার না খাওয়া। মাগরিব আদায় করে তৃপ্তিসহ পরিমাণ মতো খাবার খাওয়া। আর তাতে শরীর থাকে সুস্থ ও সবল। ইফতারের সময় অতিরিক্ত খাবার খেলে জামাআত ও ইবাদত থেকে বঞ্চিত হতে হয়।
বিশেষ করে ইফতারের কিছু সময় আগে ইফতারি সামনে নিয়ে বসে বসে তাসবিহ-তাহলিল, তাওবাহ-ইসতেগফার, দোয়া-দরূদ পড়ার মাধ্যমে সময় অতিবাহিত করা। ইফতারের আগ মুহূর্ত থেকে ইফতার করার সময় আল্লাহ তাআলা বান্দার যে কোনো দোয়া কবুল করে নেন।
আল্লাহ তা’আলা মুসলিম উম্মাহকে ইফতারের আগে তাওবা-ইসতেগফার করা, ইফতারের করার তাওফিক দান করুন। উল্লেখিত নিয়মে ইফতার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।